কিডনী ড্যামেজ না হওয়ার আগে জেনে রাখুন লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি ড্যামেজ হওয়ার আগে শারীরিক কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার কিডনির অবস্থা কেমন। চুপি চুপি এ রোগ দেহে বাসা বেঁধে আপনাকে একদম শেষ করে দিতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতাগুলোর মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের পরই অবস্থান করছে কিডনি ড্যামেজ।
ফোলাভাব
মুখ, চোখের চারপাশ হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনিতে সমস্যা হলে চোখের নিচে অথবা পায়ের গোড়ালি বা মুখের ফোলাভাব স্থায়ী হয়। সেটা এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ হলে, তা কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি বের করতে পারে না, তখন তা শরীরে জমে এই ফোলাভাব হয়।
ক্লান্তি
কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই সবসময় ক্লান্তি, দুর্বল অনুভব, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এছাড়া কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে রক্ত পরিশুদ্ধ হয় না। রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাড়তে থাকে। ফলে আরও বেশি ক্লান্ত লাগে।
ফ্রিল্যান্সিং CPM মার্কেটিং কোর্সে অল্প সময়ে আয় করুন
প্রস্রাবে সমস্যা
ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাব কমে যাওয়া দুটিই কিডনির সমস্যার লক্ষণ। শরীর থেকে পানি বের করা ছাড়াও পানি শুষে নেয়ার কাজও করে কিডনি। সেটি করতে না পারলে বেশি প্রস্রাব হয়ে থাকে। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য নির্গত করে। কিন্তু কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে মূত্রনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। বারবার মূত্রত্যাগ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়াও কিডনির সমস্যার লক্ষণ। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার প্রস্রাব করতে হলে খুব সতর্ক হন।
শ্বাসকষ্ট
আমাদের শরীরের তরল ভারসাম্যতা বজায় রাখে কিডনি। তবে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে ফুসফুসে তরল জমা হবে, ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। একে ফ্লুইড ওভারলোড বা হাইপারভোলেমিয়াও বলা হয়। অনেকে আবার এক্ষেত্রে বুকে ব্যথাও অনুভব করেন।
অনিদ্রা
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের রাতে ঘুম না আসার সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না, তখন কিছু পানি ফুসফুসে জমে যায়। সে কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
ত্বকে র্যাশ
রক্তে খনিজ এবং পুষ্টিগুলি ভারসাম্যহীন হলে ত্বকের ফুসকুড়ি এবং চুলকানি দেখা দেয়। কিডনি যখন সঠিকভাবে কাজ করে না তখন শরীরে খনিজ এবং পুষ্টির মধ্যে ভারসাম্যহীনতা থাকে।
মনোযোগ কমে যাওয়া
কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস রক্তে দূষক এবং টক্সিনের উত্পাদনের দিকে পরিচালিত করে। যার কারণে আপনি ক্লান্ত, দুর্বল বোধ করেন। আপনিও কাজের প্রতি মনোযোগ হারাবেন। এই সময়ে, রক্ত হ্রাস প্রদর্শিত হয়। নিরাপত্তাহীনতা বোধের অন্যতম কারণ এটি।
কিডনি রোগের চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের কোন প্রতিকার নেই; যাইহোক, এটি পরিচালনা করা যেতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের চিকিত্সার প্রাথমিক লক্ষ্য হল রোগের অগ্রগতি ধীর করা এবং লক্ষণগুলি পরিচালনা করা। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের নিরাময় অন্তর্ভুক্ত:
ওষুধ: নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা।
খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন: লবণ, প্রোটিন এবং পটাসিয়ামের মাত্রা কমানো কিডনির ওপর চাপ কমায়।
ডায়ালাইসিস: উন্নত রোগে, সঞ্চালন থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হতে পারে।
কিডনি প্রতিস্থাপন: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ একটি উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে গেলে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।
আরও পড়ুন:
এমন কিছু কৌশল বলবেন কি যা সারা জীবন কাজে লাগবে?
নিজকে ধ্বংসের ৩ টি কারণ কি
সফলতা পেতে হলে আগে নিজেকে ডেভলপ করতে হবে
0 Comments