Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

রমজানের চাঁদ দেখার নিয়ম, গুরুত্ব ও বিধান

 রমজানের চাঁদ দেখার নিয়ম, গুরুত্ব ও বিধান





রমজান মাসের রোজা, হজ ও কোরবানির মতো ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান চান্দ্র মাসের ওপর নির্ভরশীল। ইসলামী শরিয়তে চান্দ্র মাসের হিসাব সংরক্ষণ করা ফরজে কেফায়া, অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর অন্তত একটি দল যদি এটি না করে, তাহলে সবাই গুনাহগার হবে।


রাসুলুল্লাহ (সা.) চাঁদ দেখার তাগিদ দিয়েছেন


রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে চাঁদ দেখতেন এবং সাহাবিদেরও এটি দেখার জন্য উৎসাহিত করতেন। বিশেষত রমজানের চাঁদ দেখার বিষয়ে একাধিক হাদিসে নির্দেশনা রয়েছে। আজও সৌদি আরবসহ অনেক মুসলিম দেশে রমজানের আগে জনগণকে চাঁদ দেখার আহ্বান জানানো হয়।


 বাংলাদেশেও আগে দলবেঁধে চাঁদ দেখার প্রচলন ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা অনেকটাই কমে গেছে।


মহানবী (সা.)-এর চাঁদ দেখা নিয়ে হাদিস

হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের হিসাব করতেন এবং রমজানের চাঁদ দেখার পর রোজা রাখতেন। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকত, তবে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করতেন।” 


রমজানের চাঁদ দেখার নির্দেশনা

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

“তোমরা রমজানের জন্য শাবান মাসের চাঁদের হিসাব রেখো।”

(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৭)


হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, এই হাদিসের অর্থ হলো—”তোমরা নিয়মিত চাঁদের উদয়স্থল অনুসন্ধান করবে, যেন রমজানের চাঁদ দেখা থেকে বঞ্চিত না হও।”

(তুহফাতুল আহওয়াজি : ৩/২৪৯)


যেহেতু নবীজি (সা.) নিজে চাঁদ দেখতেন এবং এটি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন, তাই ইসলামী স্কলারদের মতে, সাধারণ মুসলমানের জন্যও চাঁদ দেখা মুস্তাহাব। এতে রোজার প্রতি আগ্রহ বাড়ে এবং এটি প্রশংসনীয় কাজ। 


নতুন চাঁদ দেখে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

নতুন মাসের চাঁদ দেখে রাসুলুল্লাহ (সা.) আনন্দ প্রকাশ করতেন ও আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলতেন—

“কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ, কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ, কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ। যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি তাঁর ওপর ঈমান আনলাম।”

(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৯২)


নতুন চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়তে হয়


নবীজি (সা.) নতুন চাঁদ দেখার পর এই দোয়া পড়তেন—


উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা আহলিলহু আলাইনা বিল-ইয়ুমনি ওয়াল-ঈমান ওয়াস-সালামাতি ওয়াল-ইসলাম; রব্বি ওয়া রব্বুকাল্লাহ।



অর্থ:

“হে আল্লাহ, আমাদের জন্য চাঁদটিকে বরকতময় করুন, ঈমান, নিরাপত্তা ও শান্তির বাহন করে উদিত করুন। হে নতুন চাঁদ! আল্লাহ আমার ও তোমার প্রভু।”

(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫১) 


রমজানের চাঁদ দেখা শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি সুন্নত এবং ইসলামী ঐতিহ্যের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণে মুসলমানদের উচিত চাঁদ দেখার গুরুত্ব উপলব্ধি করা ও সুন্নত অনুযায়ী আমল করা।


আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নতের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Post a Comment

0 Comments